১৯শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২১শে শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

চেতনা বিশ্বাসী আওয়ামীলীগের ১৫ বছরে শাসনামলে ব্যাংক কেলেঙ্কারিতে লোপাট ৯২২৬১ কোটি টাকা

দেশের ব্যাংকখাতে চেতনা বিশ্বাসী আওয়ামীলীগের ২০০৮ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত গত ১৫ বছরে বড় বড় অন্তত ২৪টি আর্থিক কেলেঙ্কারির মাধ্যমে লোপাট হয়েছে ৯২ হাজার ২৬১ কোটি টাকা। এ অর্থ গত অর্থবছরের বাজেটের ১২ শতাংশ। অন্যদিকে এসময়ে খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৮২ হাজার ২৯৫ কোটি টাকা।

সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন সোমবার (১২ আগস্ট) রাজধানীর ধানমন্ডিতে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) কার্যালয়ে ‘ব্যাংকিং খাতের সুশাসন ফিরিয়ে আনতে করণীয়’ শীর্ষক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এ তথ্য তুলে ধরেন। এসময় সিপিডির সম্মানীয় ফেলো প্রফেসর মোস্তাফিজুর রহমান ও গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম উপস্থিত ছিলেন।

ব্যাংকখাতকে এখনই ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য কিছু পদক্ষেপ নেওয়ার তাগিদ জানিয়ে ফাহমিদা খাতুন বলেন, এটি করা হলে অর্থনীতির বিরাট জায়গা আমরা উন্নত করতে পারবো।

ব্যাংকি প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীনতা খর্ব করা, নিয়মনীতি না মেনে বেসরকারি ব্যাংকের লাইসেন্স দেওয়াকে ব্যাংকখাতের মূল সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করেন তিনি।

সিপিডির নির্বাহী পরিচালক আরও বলেন, ব্যাংকগুলোতে প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা রয়েছে। বোর্ডের সদস্য নির্বাচন করা, ব্যাংক ঋণ স্যাংকশন করার প্রক্রিয়া, আন্তর্জাতিক মানদণ্ড পালনে দুর্বলতা রয়েছে। স্বাধীনতা খর্ব হতে হতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক পুরোপুরি স্বাধীনতা হারিয়ে ফেলেছে। এখানে প্রশাসনের দ্বৈততা রয়েছে। আর্থিক প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি করা হয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়ন্ত্রণের জন্য, এর কোনো প্রয়োজন নেই।

‘বেসরকারি ব্যাংকের লাইসেন্স প্রদানে কোনো বিচার-বিশ্লেষণ করা হয়নি। এর মাধ্যমে স্বার্থান্বেষী শ্রেণি তৈরির জন্য ব্যাংক লাইসেন্স দেওয়া হয়। এসব ব্যাংকের কোনো সক্ষমতা নেই। সেগুলো আবার সরকারি অর্থে রিক্যাপিটালাইজেশন করা হয়। সরকারি অর্থের কী ধরনের অপচয়।’

তিনি বলেন, ব্যক্তিখাতের ব্যাংকের মধ্যে তারা একটি অলিগার্ক তৈরি করে রেখেছে। কয়েকজন মিলে পুরো ব্যাংকখাত নিয়ন্ত্রণ করছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওপর তারা নিয়ন্ত্রণ করছে। নীতিমালা তৈরি করছে। অনেক খেলাপি ঋণের মামলা জমে গেছে। ব্যাংকখাত দুর্বল হচ্ছে, কারণ ব্যাংকিং কোম্পানি অ্যাক্ট পরিবর্তন করা হয়। আইনের ফাঁকফোকরে অনেক ঋণ খেলাপি বের হয়ে যায়।

খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়েই চলছে জানিয়ে এ অর্থনীতিবিদ আরও বলেন, ২০০৯ সালে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ২২ হাজার ৪৮১ কোটি টাকা, যা চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৮২ হাজার ২৯৫ কোটি টাকায়। ২০১৬ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির বিষয়টির এখনো তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষ করার জন্য সিআইডি ৭৯ বার সময় নিয়েছে।

guest
0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments

এই বিভাগের আরও খবর

জামায়াতের সম্মেলনে অংশ নিয়ে বিতর্কে আওয়ামী লীগ নেতা

নিজস্ব প্রতিবেদক: কুমিল্লার লালমাই উপজেলার বাগমারা উত্তর ইউনিয়নে অনুষ্ঠিত জামায়াতে ইসলামীর ইউনিয়ন সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে আলোচনার জন্ম দিয়েছেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রফিকুল

এনসিপির সাধারণ সভা: বিচার, সংস্কার ও গণপরিষদ নির্বাচনের দাবিতে কর্মসূচি ঘোষণা

নিজস্ব প্রতিবেদক: জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) বিচার, সংস্কার ও গণপরিষদ নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন তীব্র করার ঘোষণা দিয়েছে। শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) দলের অস্থায়ী কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত তৃতীয়

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বড় চ্যালেঞ্জ আরাকান আর্মি: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক: রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ইস্যুতে মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মিকে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ না পারছে তাদের সঙ্গে

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে জিএসপি পুনর্বহালের চেষ্টা চলছে: অর্থ উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক: যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধা (জিএসপি) পুনরায় চালুর উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। একই সঙ্গে মার্কিন বাজার থেকে আমদানি বাড়িয়ে ঘাটতি কমানোর

Scroll to Top