নাটোরের বড়াইগ্রামে মৃত স্বামীকে দেখতে গিয়ে এক নববধূসহ তার স্বজনরা মারধরের শিকার হয়েছেন । সোমবার (১৪ অক্টোবর) সন্ধ্যায় উপজেলার বাগডোব গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী গৃহবধূ নাটোর সদর উপজেলার হাজরা নাটোর এলাকার বাসিন্দা।
ভুক্তভোগীরা জানান, প্রায় ছয়মাস আগে নাটোরের বড়াইগ্রামের বাগডোব গ্রামের প্রভাত কুমারের ছেলে জয়ন্ত কুমারের সঙ্গে নাটোর শহরতলীর হাজরা নাটোর এলাকার শ্যামল চন্দ্রের মেয়ে শতাব্দি রাণীর বিয়ে হয়। বিয়ের পর শতাব্দি তার বাবার বাড়িতেই অবস্থান করছিলেন। শনিবার বিকেলে দুর্গাপূজা উপলক্ষে জয়ন্ত কুমার তার শ্বশুরবাড়িতে আসেন। পরে শতাব্দিকে নিয়ে পূজার কেনাকাটা করেন। রাতে শ্যামল বাড়ির বাইরে কোথাও গিয়ে মদপান করেন। এর কিছুক্ষণ পর তিনি শ্বশুরবাড়িতে এসে অসুস্থতা বোধ করেন।
রাতেই শ্যামল তার গাড়ি নিয়ে বাড়িতে চলে যান। পরদিন সকালে তার অসুস্থতা বেড়ে গেলে তাকে প্রথমে বড়াইগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় শ্যামলের জ্যাঠাতো ভাই মিলন তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেদিন রাতে শ্যামল মারা যান।
সেখানে ময়নাতদন্ত ও সকল আনুষ্ঠানিকতা শেষে সোমবার বিকেলে জয়ন্তের মরদেহ বাড়িতে নেওয়া হয়। পরে সন্ধ্যার আগমুহূর্তে জয়ন্তের স্ত্রী শতাব্দি রানী, তার বাবা শ্যামল চন্দ্র, মা রুপালী রাণীসহ ১৪-১৫ জন স্বজন মরদেহ দেখতে যান। এ সময় মরদেহ দেখতে না দিয়ে মৃত শ্যামলের জ্যাঠাতো ভাই মিলনসহ বেশ কয়েকজন তাদের ওপর চড়াও হন। এ সময় নববধূসহ তাদের স্বজনদের এলোপাথাড়ি পিটিয়ে আহত করে তারা। খবর পেয়ে পুলিশ সবাইকে উদ্ধার করে।
শতাব্দি রাণীর অভিযোগ, শ্যামলের জ্যাঠাতো ভাই মিলনই শ্যামলের মৃত্যুর জন্য দায়ী। সে কেন মদপানে বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত একজন রোগীকে তড়িঘড়ি করে প্রাইভেট গাড়িতে রাজশাহী নিয়ে গেলো? কেন তার মৃত স্বামীর মুখটা দেখতে না দিয়ে সবাইকে মারপিট করলো? বিষয়টি সঠিক তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের শান্তি চান তিনি। শ্যামলের মৃত্যু ও মারপিট বিষয়ে মামলা করবেন বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে মিলনের সঙ্গে যোগাযোগ করে মারপিটের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, পাবলিক উত্তেজিত হয়ে সবাইকে মারপিট করেছে।
আপনি নিজেও মারধর করেছেন এমন কথা বলতেই মিলন উত্তেজিত হয়ে জানান, এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে চাই না। পরে ফোনের সংযোগ কেটে দেন তিনি।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসার ডা. আল মাসুদ মো. মিজানুর রহমান বিষাক্ত মদপানে জয়ন্তের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।