চট্টগ্রাম জজ কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফের বড় বোন জান্নাত আরা বেগম গণমাধ্যমকে কেঁদে কেঁদে বলেন ‘আমার ছোট ভাই আলিফের তিন বছর বয়সী একটি কন্যাসন্তান আছে। সে অকালে হারাল তার বাবাকে। অনাগত সন্তানও তার বাবার মুখ দেখবে না আবার ভাইয়েরও তার দ্বিতীয় সন্তানকে দেখার সৌভাগ্য হলো না। এর চেয়ে কষ্টের আর কী হতে পারে? আমার নিরপরাধ ভাইকে কেন মেরে ফেলা হলো? আমরা এই হত্যার বিচার চাই।’
নিহত আলিফের (৩৫) বাড়ি চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার আমিরাবাদ এলাকায়। সম্প্রতি আলিফ চট্টগ্রাম আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর নিযুক্ত হয়েছিলেন। সাত ভাই-বোনের মধ্যে সাইফুল চতুর্থ।
বিলাপ করতে করতে গণমাধ্যমকে বাবা জামাল উদ্দিন বলেন, ‘আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই। যারা আমার ছেলেকে এমনভাবে মেরেছে, আমি আল্লাহর কাছে তাদের বিচার দিলাম। আল্লাহ যেন তাদের বিচার করেন।’
সাইফুলের মেয়ের নাম তাসকিয়া। তার স্ত্রী ইসরাত জাহান তারিন এখন চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা। সাজানো-গোছানো সংসারে দ্বিতীয় সন্তানের অপেক্ষায় ছিলেন আলিফ-তারিন দম্পতি। কিন্তু একটি দুর্ঘটনায় সব স্বপ্ন ভেঙে গেল তাদের।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মো. হাসান নামে এক আইনজীবী বলেন, পুলিশ ও আইনজীবীদের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের মধ্যে আইনজীবী আলিফকে বিক্ষোভকারীরা কোপানো শুরু করে। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।
জাতীয় পতাকার অবমাননার অভিযোগে রাষ্টদ্রোহ মামলায় মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) চট্টগ্রামে সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে কারাগারে নেওয়ার সময় তার মুক্তির দাবি জানায় ইসকন সমর্থকরা।
এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় কয়েকজন আহত হন।
আহতদের উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা আহত শিক্ষানবিশ আইনজীবী সাইফুলকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ছাড়া লালদিঘিতে সংঘর্ষের ঘটনায় চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতাল ছাড়াও আহত হয়ে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৯ জন। তবে এ ১৯ জনের সবাই আশঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আব্দুল মন্নান।
তিনি বলেন, আহতদের কেউ মাথায় আঘাত পেয়েছেন, কেউ হাতে, কেউ শরীরের অন্যান্য জায়গায়। তাদের হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে।